কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য বা বর্ণ-বৈষম্য দূর করার জন্য আমেরিকা বা সারা বিশ্বে আব্রাহাম লিংকনের নাম সবার প্রথমেই আসে। কিন্তু এবার ট্র্যাম্প বলেছেন তিনি সবথেক বেশি কিছু করেছেন কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য।
সম্প্রতি ফক্স নিউজে হ্যারিস ফকনার সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবী করেন তিনি কালো সমাজের জন্য আমেরিকার যেকোন প্রেসিডেন্টের থেকে বেশি কাজ করেছেন এমনকি আব্রাহাম লিংকনের থেকেও বেশি।
আব্রাহাম লিংকন মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি যিনি দাসত্বের অবসান ঘটিয়েছিলেন। এজন্য তাকে অনেক মাশুল ও দিতে হয়েছে।
ট্র্যাম্প বলেন ” সুতরাং আমার মনে হয় আমি কালো সমাজের জন্য যেকোন প্রেসিডেন্টের থেকে বেশি কিছু করেছি। যদি আপনি লিংকনের দিকে তাকান তবে তিনি অনেক কিছুই করেছেন কিন্তু তাঁর কাজ গুলো ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। অন্যকথায় তাঁর শেষটা ভালো ছিল না।”
কিন্তু ফকনার এই কথায় হস্তক্ষেপ করে বলেন ” মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমরা মুক্ত, সুতরাং আমার মনে হয় তিনি (আব্রাহাম লিংকন) অনেক ভালো কিছুই করেছিলেন”।
উত্তরে ট্র্যাম্প বলেন ” আমরা মুক্ত, কিন্তু আমি কি বলেছি আপনি কি বুঝতে পেরেছেন?”
ফকনার বলেন ” জি আমি বুঝতে পেরেছি”
এটাই প্রথমবার নয় যে তিনি দাবী করেছেন তিনি সবার থেকে বেশি কিছু করেছেন। তবে তাঁর এই কথায় সমালোচনাও কম হয়নি।
হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড মাইকেল ফন্ট্রয় নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন “সম্ভবত এটিই ট্রাম্পের সবচেয়ে বাজে দাবী”। আরো বলেন “তিনি শুধুমাত্র অন্য কারও চেয়ে বেশি কিছু করেননি, বরং তিনি সবচেয়ে কমের কাছাকাছি করেছেন।”
দ্য টাইমস অনুসারে, বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে নাগরিক অধিকারকে সমান করার ক্ষেত্রে লিংকন এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লিন্ডন বি জনসনের সবচেয়ে আইনসুলভ সাফল্য রয়েছে। জনসন বিশেষত নাগরিক অধিকার আইন, ভোটিং রাইটস অ্যাক্ট এবং ফেয়ার হাউজিং আইন পাস করার পক্ষে ছিলেন। এছাড়া আরো কিছু প্রেসিডেন্ট কালোদের জন্য কাজ করেছেন।
কৃষ্ণাঙ্গরা যখন সমান অধিকার এবং পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন ঠিক সেই সময় ট্র্যাম্প এই মন্তব্যটি করলেন। তবে ট্র্যাম্প এ পর্যন্ত কৃষ্ণাঙ্গদের সমর্থনে বা পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোন কথায় বলেনি। বরং বিক্ষোভকারীদের হঠকারী এবং সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করেছেন।
এমনকি তিনি কঠোরহাতে সেনা নামিয়ে এদের মোকাবিলার কথাও বলেছেন। কিন্তু বেশিরভাগ মেয়র এবং গভর্নর এর পক্ষে মত দেয়নি।