শিরোনাম দেখেই হয়তো আপনার মনে সন্দেহ লাগতে পারে। কিন্তু ঠিক এমনটিই ঘটেছে মরিয়ম নবতানজির ক্ষেত্রে। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই মরিয়ম জোড়া সন্তানের জন্ম দেন। তারপর আরো পাচবার জমজ সন্তানের জন্ম দেন। আরো তিনবার চারটি এবং চারবার তিনটি করে সন্তান জন্ম দেন।
মরিয়ম নবতানজি একটি বিরল জিনগত রোগে ভুগছেন এবং একারনেই ৩৬ বছর বয়সে ৪৪ টি বাচ্চা প্রসব করেছিলেন।
২০১৫ সালে মরিয়মের স্বামী ও তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে মরিয়ম একাই তাঁর বিশাল পরিবারের দায়িত্ব পালন করছে।
এখন ৪০ বছর বয়সে ডাক্তাররা মরিয়মের আরও সন্তানের জন্ম দেওয়া বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন। জানা গেছে মরিয়মের বাবা ও কয়েকটি স্ত্রীর গর্ভে ৪৫ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
এ পর্যন্ত মরিয়ম তিনবার চারটি, চারবার তিনটি এবং ছয়বার দুইটি করে বাচ্চা জন্ম দিয়েছেন এবং সেই সাথে নিজের যত্ন এবং সব সন্তানের ও সঠিক যত্ন নিয়েছেন।
এই মুহূর্তে মরিয়মকে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর মহিলা বলা হচ্ছে। মরিয়মের কাহিনীটা অন্য আর আর পাচটা আফ্রিকান মেয়ের মতই।
মরিয়মের বিয়ে হয় ১২ বছর বয়সে তাঁর থেকে ২৮ বছরের বড় এক ব্যক্তির সাথে। তাঁর এক বছর পরেই জমজ সন্তানের জন্ম দেয়।

মরিয়মের বাড়ি উগান্ডায়। আর বাড়ির চারিদিকেই রয়েছে কফি ফিল্ড। উগান্ডাতে গড়ে প্রতিটা বাড়িতে সন্তান রয়েছে ৫.৬ জন। সেই হিসাবে এখানকার পরিবার গুলো একটু আকারেই বড়। তাছাড়া জন্মহারের দিক থেকে আফ্রিকাতে উগান্ডা এক নম্বরে রয়েছে। কিন্তু মরিয়মের পরিবারটা অন্য সবার থেকে একটু বেশিই বড়। বলা যায় বিশাল পরিবার।
২৩ বছর বয়সেই মরিয়মের ২৫ টা বাচ্চা ছিল। এতে মরিয়ম বুঝতে পারে তাকে এটা নিয়ন্ত্রন করতে হবে। ডাক্তারকে অনেকবার বলার পরও কোন কাজ হয়নি।
কিন্তু ডাক্তার তাকে বলে যে তাঁর বাচ্চা নেয়া উচিত কারন তাঁর শরীরে ডিম্বানুর সংখ্যা অনেক বেশি।
মরিয়মের সর্বশেষ বাচ্চা হবার সময় মারা যায়। তারাও জমজ ছিল। আর একটি বাচ্চা মারা যায় যখন তিনি কাজে ছিলেন। তাঁর স্বামীও প্রায়ই তাকে ছেড়ে চলে যেত।
মরিয়ম বলেন ” আমি অনেক কষ্টের মধ্যে বড় হয়েছি, এমনকি আমার স্বামীও আমাকে অনেক কষ্টের মধ্য রেখে চলে গেছে” । আরো বলেন “আমার সমস্ত সময় আমার বাচ্চাদের দেখাশোনা করা এবং কিছু অর্থ উপার্জনের জন্য ব্যয় করা হয়েছে।”
উগান্ডার কমপালার মুলাগো হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ চার্লস কিগুন্ডু বলেন “তার ক্ষেত্রে হাইপার-ডিম্বাকৃতের জিনগত প্রবণতা আছে, যা এক সাথে একাধিক ডিম নির্গত করে এবং বহু সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে “
তবে মরিয়ম বলে ডাক্তাররা ইতিমধ্যে তাঁর সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতার রোধ করে দিয়ে। ডাক্তার তাঁর জরায়ু অপারেশনের মাধ্যমে সরিয়ে দিয়েছে।
মরিয়ম সন্তানদের লালনপালনের জন্য চুলের দোকানে কাজ করে। তাছাড়া যেকোন কাজ করেন। তাঁর ইনকামের প্রায় সব টাকায় যায়, খাবার, পোশাক, আর স্কুলের খরচে।
সুত্রঃ ডেইলি মিরর